Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
"SAFA DEEN: ইলমের আলোয় উদ্ভাসিত হোন, হিদায়াতের পথে এগিয়ে চলুন।"
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
রমযান মাসের ফযীলত ও গুরুত্ব

রমযান মাসের ফযীলত ও গুরুত্ব

রমযান মাসের ফযীলত ও গুরুত্ব কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে

রমযান মাস ইসলাম ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র ও বরকতময় মাস। এটি আত্মশুদ্ধি, তাকওয়া অর্জন এবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ। এই মাসে রোযা রাখা ফরয করা হয়েছে এবং কুরআন মাজীদ নাজিল করা হয়েছে। কুরআন ও হাদিসে রমযানের বিশেষ গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

রমযানের ফযীলত কুরআনের আলোকে

১. রমযান মাসে কুরআন নাজিল হয়েছে : রমযান মাসের সর্বশ্রেষ্ঠ বৈশিষ্ট্য হলো, এ মাসেই মানবজাতির হিদায়াতের জন্য আল্লাহ তা’আলা মহাগ্রন্থ আল-কুরআন নাজিল করেছেন।

আল্লাহ বলেন: “রমযান মাস, যার মধ্যে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে—মানুষের জন্য হিদায়াত এবং সত্যপথের স্পষ্ট নিদর্শন ও সুস্পষ্ট বিধানরূপে।” (সূরা আল-বাকারা: ১৮৫)

কুরআনের আলোকে সঠিক জীবন যাপনের শিক্ষা লাভের জন্য এই মাসে বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা উচিত।

২. রোযা ফরয করা হয়েছে : রমযান মাসে রোযা রাখা প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের জন্য ফরয করা হয়েছে। এটি শুধু পানাহার থেকে বিরত থাকার নাম নয়, বরং আত্মসংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও আত্মশুদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।

আল্লাহ বলেন: “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমন ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।” (সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)

রোযার মাধ্যমে মুসলমানরা আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির শিক্ষা গ্রহণ করে, যা তাদের ঈমানকে আরও মজবুত করে।

৩. লাইলাতুল কদরের ফযীলত : রমযান মাসের সবচেয়ে বরকতময় রাত হলো লাইলাতুল কদর। এ রাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে অশেষ রহমত ও মাগফিরাত বর্ষিত হয়।

আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই আমি একে (কুরআন) লাইলাতুল কদরে নাজিল করেছি। আর তুমি কি জানো লাইলাতুল কদর কী? এটি হাজার মাসের চেয়ে উত্তম।” (সূরা আল-কদর: ১-৩)

এই রাতে ইবাদত করা হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও বেশি সওয়াব অর্জনের সুযোগ করে দেয়।

রমযানের ফযীলত হাদিসের আলোকে

১. রমযানে রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তি

রাসূলুল্লাহ ﷺ রমযান মাসকে তিনটি ভাগে ভাগ করেছেন:

  • প্রথম ১০ দিন রহমত (আল্লাহর অনুগ্রহ)
  • মধ্যবর্তী ১০ দিন মাগফিরাত (ক্ষমা)
  • শেষ ১০ দিন নাজাত (জাহান্নাম থেকে মুক্তি)

হাদিসে এসেছে: “রমযান মাসের প্রথম অংশ হচ্ছে রহমত, মধ্যবর্তী অংশ হচ্ছে মাগফিরাত এবং শেষ অংশ হচ্ছে জাহান্নাম থেকে মুক্তির সময়।” (আল-বায়হাকী: ৩৪৫৭)

২. জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, শয়তানকে বন্দি করা হয় :  রমযান মাসে আল্লাহ তাআলা রহমতের দরজাগুলো খুলে দেন এবং শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন, যাতে মুসলমানরা পূর্ণভাবে ইবাদতে মনোযোগ দিতে পারে।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: “যখন রমযান আসে, জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়।” (সহিহ বুখারি: ১৮৯৯, সহিহ মুসলিম: ১০৭৯)

৩. রমযানে নফল ইবাদতের সওয়াব ফরযের সমান হয় : ও রমযান মাসে আল্লাহ তাআলা প্রতিটি ইবাদতের সওয়াব বহুগুণ বৃদ্ধি করে দেন।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: “রমযানে এক নফল ইবাদতের সওয়াব ফরয ইবাদতের সমান, আর এক ফরয ইবাদতের সওয়াব অন্যান্য মাসের ৭০টি ফরযের সমান।” (সুনান ইবন মাজাহ: ১৬৪2)

৪. রমযানে গুনাহ মাফ হয়ে যায় : যারা ঈমানের সাথে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রোযা রাখে, তাদের পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।

রাসূল ﷺ বলেন: “যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে (সওয়াবের আশায়) রমযানের রোযা রাখবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বুখারি: ২০১৪, সহিহ মুসলিম: ৭৬০)

৫. লাইলাতুল কদরে ইবাদতের পুরস্কার

লাইলাতুল কদরে ইবাদত করলে সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হয়।

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমান ও ইহতিসাবের সাথে লাইলাতুল কদরে ইবাদত করবে, তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।” (সহিহ বুখারি: ২০১৪, সহিহ মুসলিম: ৭৬০)

রমযানে করণীয় আমল

রমযান মাসের বরকত ও ফযীলত অর্জনের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল করা উচিত:

  • সঠিক নিয়মে রোযা পালন করা
  • বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা
  • তাহাজ্জুদ ও নফল নামাজ আদায় করা
  • ইফতার করানো ও দান-সদকা করা
  • তাকওয়া ও সংযম অবলম্বন করা
  • লাইলাতুল কদরে বিশেষ ইবাদত করা
  • আস্তাগফিরুল্লাহ ও দরুদ শরীফ বেশি পড়া
  • গরীব-অসহায়দের সাহায্য করা

উপসংহার

রমযান মাস আমাদের জন্য আল্লাহর এক বিশেষ দান। এই মাসে আমরা নিজেদের সংশোধন ও পরিশুদ্ধ করার সুযোগ পাই। আল্লাহর রহমত ও মাগফিরাত লাভের এই সুবর্ণ সুযোগ কাজে লাগানো আমাদের কর্তব্য।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে রমযানের ফযীলত অর্জন করার তাওফিক দান করুন এবং আমাদের রোযা, নামাজ ও সকল ইবাদত কবুল করুন। আমীন!

প্রশ্ন করুন

আপনার মনে কোনো ইসলামিক প্রশ্ন বা আপনি কিছু জানতে চান, ওপরের ফর্মটি পূরণ করে আমাদের কাছে আপনার বার্তা পাঠান, এবং আমরা দ্রুত আপনার সাথে যোগাযোগ করবো।