Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors
"SAFA DEEN: ইলমের আলোয় উদ্ভাসিত হোন, হিদায়াতের পথে এগিয়ে চলুন।"
Generic selectors
Exact matches only
Search in title
Search in content
Post Type Selectors

যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায়: কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিত আলোচনা

যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায়: কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিত আলোচনা

যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায়: কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিত আলোচনা : রমযান মাসে রোযা রাখা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাবার, পানীয় এবং কিছু নির্দিষ্ট কাজ থেকে বিরত থাকাকে রোযা বলা হয়। তবে কিছু কাজ রয়েছে, যা করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায়।

এই পোস্টে কুরআন ও হাদিসের আলোকে বিস্তারিতভাবে সেইসব কারণ আলোচনা করা হলো, যেগুলোর ফলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায়।

প্রথমত: যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় এবং কাজা ও কাফফারা উভয়ই দিতে হয়

নিচে বর্ণিত কারণগুলোর কারণে রোযা ভঙ্গ হলে একদিনের কাজা এবং ৬০ দিন একটানা রোযা রাখা (কাফফারা) বা ৬০ জন গরিবকে খাওয়ানো ওয়াজিব হয়।

১. ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সহবাস (যৌন মিলন) করা

যদি কেউ রোযা থাকা অবস্থায় ইচ্ছাকৃতভাবে স্ত্রী সহবাস করে, তাহলে তার রোযা ভেঙে যাবে এবং তার উপর কাজা ও কাফফারা উভয়ই ফরয হবে।

হাদিস: আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূল ﷺ-এর কাছে এসে বলল:

“হে আল্লাহর রাসূল! আমি রমযানে রোযা রেখে আমার স্ত্রী সহবাস করেছি।”

তখন রাসূল ﷺ তাকে কাফফারা স্বরূপ (১) এক কান্তা গোলাম মুক্তি দিতে, (২) ৬০ দিন একটানা রোযা রাখতে অথবা (৩) ৬০ জন গরিবকে খাওয়াতে বললেন। (সহিহ বুখারি: ১৯৩৬, সহিহ মুসলিম: ১১১১)

দ্বিতীয়ত: যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় এবং শুধু কাজা করতে হয়

নিচের কাজগুলো করলে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায়, তবে কাফফারা দিতে হয় না; শুধু একদিনের কাজা করতে হয়।

২. ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু খাওয়া বা পান করা

যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে পানি পান করে বা খাবার খায়, তাহলে তার রোযা ভেঙে যাবে এবং তাকে পরে সেই রোযাটি কাজা করতে হবে।

আল্লাহ বলেন: “তোমরা সুবহে সাদিক থেকে শুরু করে রাত আসা পর্যন্ত রোযা পূর্ণ করো।”

(সূরা আল-বাকারা: ১৮৭)

৩. রোযার নিয়ত ভেঙে ফেলা (ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা না রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া)

যদি কেউ রোযার নিয়ত করেও দিনের কোনো এক সময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে রোযা ভেঙে ফেলে, তাহলে তার রোযা বাতিল হয়ে যাবে এবং কাজা পালন করতে হবে।

৪. মাস্টারবেশন (হস্তমৈথুন) করা

যদি কেউ রোযার মধ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে মাস্টারবেশন করে এবং বীর্যপাত হয়, তাহলে তার রোযা ভেঙে যাবে এবং পরে তাকে এই রোযার কাজা করতে হবে।

হাদিস: রাসূল ﷺ বলেন: “(আল্লাহ বলেন) রোযাদার ব্যক্তি তার খাদ্য, পানীয় এবং নিজের প্রবৃত্তিকে আমার (আল্লাহর) জন্য ত্যাগ করে।” (সহিহ বুখারি: ১৮৯৪, সহিহ মুসলিম: ১১৫১)

৫. কোনো কিছু খেয়ে বা পান করে মনে করা যে সূর্য ডুবে গেছে

যদি কেউ সন্ধ্যা হয়েছে মনে করে ইফতার করে ফেলে এবং পরে বুঝতে পারে সূর্য তখনও অস্ত যায়নি, তাহলে তার রোযা ভেঙে যাবে এবং তাকে পরে সেই রোযার কাজা করতে হবে।

হাদিস:

আসমা বিনতে আবু বকর (রাঃ) বলেন: “একদিন আমরা রাসূল ﷺ-এর সময় মেঘাচ্ছন্ন দিনে ইফতার করলাম। পরে সূর্য উদিত হলো (অর্থাৎ তখনও সূর্য ডোবেনি)।” (সহিহ বুখারি: ১৯৫৯)

তৃতীয়ত: যেসব কারণে রোযা ভঙ্গ হয় না

নিম্নলিখিত কাজগুলো করলে রোযা ভঙ্গ হবে না:

১. ভুলে কিছু খাওয়া বা পান করা

যদি কেউ ভুলে খায় বা পান করে, তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না।

হাদিস: রাসূল ﷺ বলেন: “যদি কেউ ভুলক্রমে খায় বা পান করে, তবে সে যেন রোযা পূর্ণ করে, কারণ এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে খাদ্য ও পানীয় সরবরাহ করা।” (সহিহ বুখারি: ১৯৩৩, সহিহ মুসলিম: ১১৫৫)

২. কুলি করা বা নাকে পানি দেওয়া (কিন্তু গিলে না ফেলা)

রোযার মধ্যে কুলি করা বা নাকে পানি দেওয়া জায়েজ, তবে গলার নিচে চলে গেলে রোযা ভেঙে যাবে।

৩. ইনজেকশন বা ইনহেলার ব্যবহার করা

শরীরে ওষুধ প্রবেশ করলেও যদি তা খাদ্য হিসেবে না হয়, তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না। তবে পুষ্টিকর স্যালাইন নিলে রোযা ভেঙে যাবে।

৪. স্বপ্নদোষ (নাইটফল) হওয়া

রোযার সময় যদি স্বপ্নদোষ হয়, তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না।

৫. বীর্যপাত ছাড়া যৌন উত্তেজনা অনুভব করা

যদি কেউ যৌন উত্তেজিত হয় কিন্তু বীর্যপাত না হয়, তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না।

৬. ইচ্ছাকৃতভাবে বমি না করা

যদি অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হয়, তাহলে রোযা ভঙ্গ হবে না। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে রোযা ভেঙে যাবে।

হাদিস: রাসূল ﷺ বলেন: “যে ব্যক্তি অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, তার রোযা ভঙ্গ হবে না। কিন্তু যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে, সে যেন রোযার কাজা করে।” (সুনান আবু দাউদ: ২৩৮০, সুনান তিরমিজি: ৭২০)

উপসংহার

রোযা ভঙ্গের কারণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা জরুরি, যাতে অনিচ্ছাকৃত ভুলের কারণে রোযা নষ্ট না হয়। ইচ্ছাকৃতভাবে খাবার খাওয়া, স্ত্রী সহবাস, মাস্টারবেশন, কাজা ভেবে ইফতার করা ইত্যাদি কারণে রোযা ভঙ্গ হয়ে যায় এবং কাজা ও কাফফারা উভয়ই দিতে হয়। তবে ভুলে খেলে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি হলে রোযা ভঙ্গ হয় না।

আমরা যেন কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী রোযা পালনে যত্নবান হই এবং রোযা নষ্টকারী কাজ থেকে বিরত থাকি। আল্লাহ আমাদের সঠিকভাবে রোযা রাখার তাওফিক দান করুন। আমীন!

প্রশ্ন করুন

আপনার মনে কোনো ইসলামিক প্রশ্ন বা আপনি কিছু জানতে চান, ওপরের ফর্মটি পূরণ করে আমাদের কাছে আপনার বার্তা পাঠান, এবং আমরা দ্রুত আপনার সাথে যোগাযোগ করবো।